বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০১০

SEO - কতোখানি প্রয়োজন আর কতোখানি হলে তা অতিরিক্ত? তা জেনে নেই........

আমরা জানি SEO করতে হবে, ইউজাররা সার্চ করলে যেন আমাদের ব্লগ পাতা তারা সবার আগে খুঁজে পায়। এমন ব্লগার খুঁজে পাওয়া যাবেনা যার মনে এই শুপ্ত বাসনা নেই। সার্চ পাতায় প্রথম স্থান অধিকারের লড়াই অনেক জোরদার। পরীক্ষায় সবাই প্রথম হয়না। তাই, অন্তত প্রথম দশেও যদি থাকা যায় সেই চেষ্টাতেই অনেক ব্লগার প্রচুর সময় অতিবাহিত করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন। কারন, টিঁকে থাকার এই লড়াই শেষ হবেনা। পরিবর্তনশীল এই পৃথিবীতে ইন্টারনেটেও পরিবর্তনের হাওয়া লেগেই আছে। ইন্টারনেটে পরিবর্তনের এই হাওয়াকে 'হাওয়া' না বলে 'ঝড়' বলাই ভালো। এবং, আপনারা জানেন ঝড় কি জিনিস, সামান্য ত্রুটি কিম্বা অসাবধানতায় সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতা থেকে সরে যেতে হতে পারে।


আজকের আলোচনা, SEO করতে হবে, কিন্তু কতোখানি করলে তা ভালো, আর কতোখানি করে ফেললে সেটা অতিরিক্ত? এর সীমারেখা কোথায়? কেউ কি তা জানে? সার্চ ইঞ্জিনগুলো তাদের নিয়মনীতি নির্ধারন করেই দিয়েছে। সেই অনুযায়ী আমরা জেনেছি সার্চ ইঞ্জিনের কাছে গ্রহণযোগ্য কি কি, আর বর্জনীয় কি কি।

কোনো ওয়েবমাস্টার যদি সার্চ ইঞ্জিনের নিয়মনীতির পরিপন্থী কিছু করে বসেন তবে গুগলের মতো প্রচণ্ড ডাকাবুকো সার্চ ইঞ্জিন একেবারেই তা পছন্দ করেনা এবং অনেক সময়ে প্রথম পাতা থেকে সেই ওয়েবসাইটকে সরিয়ে দেওয়া হয়, এমনকি ধৃষ্টতার গুরুত্ব বুঝে সেই ওয়েবসাইটকে সার্চ ইন্ডেক্স থেকে চিরতরে মুছেও ফেলা হতে পারে। তাই, কতোটুকু এসইও করবেন আর কতোখানি হলে অতিরিক্ত হয়ে যাবে সেই পার্থক্য বুঝেই এগোনো ভালো।

বাংলাদেশে বর্তমানে ব্লগার/ওয়েবমাস্টারদের পরিস্থিতি তিনরকমের হয়ে আছে। এক দল ওয়েবমাস্টার আছেন যারা প্রকৃত তথ্যগুলি জানেন ও বোঝেন এবং সেই অনুযায়ী মধ্যপন্থা নিয়েছেন - না অল্প এসইও না অতিরিক্ত এসইও করে রেখেছেন। দ্বিতীয় শ্রেণীর ওয়েবমাস্টাররা 'অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী' অবস্থায় আছেন। তারা ভাবছেন তারা জানেন অনেক কিছু, কিন্তু তাদের অবস্থা আসলে বেশি জানতে গিয়ে কিছুই শেখা হয়নি অবস্থায় থেকে গিয়েছে। তৃতীয় দলে আছেন সেইসব ওয়েবমাস্টার যারা নতুন এসেছেন, শিখছেন। তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছেন। পাশ্চাত্যের প্রফেশনাল ব্লগাররা মূলত এই তৃতীয় শ্রেণীকে টার্গেট করেই ব্যবসা ফেঁদেছেন। আর, প্রথম দুই শ্রেনীর ওয়েবমাস্টাররা এই তৃতীয় শ্রেণীর ওয়েবমাস্টারদেরকে আরো বিভ্রান্ত করে ফেলেছেন - বেশি জানা ও অল্প জানা লোকের সান্নিধ্যে এলে যা হয় আর কি!

এই ভীড়ের মধ্যে ভুল-ঠিক, স্বল্প-পর্যাপ্ত-অতিরিক্ত এইসব পরিস্কার ভাবে বুঝে নিতে না পারলেই সাফল্য অধরা রয়ে যায়। ভুলে যাবেন না, ইন্টারনেট একটি মুক্ত বিশ্ব। এখানে সবাই সবার মত প্রকাশ করে চলেছেন। তার মাঝে ভুল ঠিক চিনে নিতে না পারলে বড্ড অসহায় অবস্থায় পড়তে হবে।

যারা ভুল শুধরে নিয়ে এগোতে চান, তাদের জন্যও সামনের পথ সাবধানেই চলতে হবে। একটি ডোমেইন দিয়ে অনেক চেষ্টা করে ফেইল করার পরে সেই ডোমেইনেই নতুন প্রয়াস চালানো হলে সাফল্য নাও আসতে পারে। কারন, এই চেষ্টা করতে করতে যতোদিন অতিক্রান্ত হলো, ততোদিনে সার্চ ইঞ্জিনও বুঝে গেছে যে আপনি পথ চেনেননা, বিভ্রান্ত, অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়ে সাফল্য হাতরে বেড়াচ্ছেন। এর প্রভাব পড়ে ডোমেইন নামের উপরে। তাই, নতুন প্রয়াস নতুন ডোমেইন নামেই করা ভালো।

হয়তো ভাবছেন যে সে তো অনেক টাকার ব্যাপার! হ্যাঁ, তাহলেও কিছু করার নেই। ওই যে বলেছি, মুক্তবিশ্ব? এখানে বড়লোক দেশের ওয়েবমাস্টাররাও তো আছেন? তারা এক একজন প্রচুর ডোমেইন কিনে ফেলছেন। একটা কীওয়ার্ড মাথায় আসামাত্র টুক করে কিনে ফেলেন তারা। ইচ্ছেমতো ডোমেইন কেনাবেচাও করেন তারা। এদের মাঝে টিঁকতে হবে তো? গরীব দেশের ওয়েবমাস্টারদের অনেক অসুবিধা হবে, কিন্তু কি করা যাবে বলুন? সবখানেই টাকার খেলা। খুব অসুবিধা হলে ফ্রি ব্লগস্পট তো থাকছেই! চিন্তা কি?

বিগ ব্রাদার গুগল সবসময়ে দাদাগিরি করেনা, বড়ভাইয়ের কাজটিও তারাই করছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তারা অনেক কিছু ফ্রি-তে দিয়েছে। উপভোগ করার পাশাপাশি উপযোগিতার দিকটাও খুঁজে নিন। ডোমেইন নাহলে হবেই না, এই কথা ভাবার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারন আমি দেখছিনা। DMOZ-এ প্রায় দশ হাজার ফ্রি ব্লগস্পট ব্লগ নথিভুক্ত আছে এবং গুগল DMOZ-কে মান্যতা দেয়। এই থেকেই বুঝে নিন? আর হ্যাঁ, আগের পোস্টেই জানিয়েছি যে .com পাবলিক ডোমেইনে ওয়ার্ডপ্রেসের চাইতে ব্লগস্পট ঢের বেশি জনপ্রিয় সারা বিশ্বে। কেন জানিয়েছিলাম? ওয়ার্ডপ্রেসকে ছোট করতে নয়! বাংলাদেশ বিরাট বড়লোক দেশ নয়, প্রচুর ডোমেইন কিনে ফেলতে পারবেন না অনেকেই। তাই এই অসীম জনপ্রিয় ফ্রি ব্লগ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেই অনেক কিছু করতে পারবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন